বরিশালে রিমান্ডে নারী আসামিকে নির্যাতন ॥ দুই ওসি প্রত্যাহার
বরিশাল ব্যুরো : জেলার উজিরপুর মডেল থানায় রিমান্ডে থাকা নারী আসামিকে শারিরিক ও যৌণ নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্বে অবহেলার কারণে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও পরিদর্শককে (তদন্ত) প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
সোমবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশালের রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান বলেন, নারী আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে শারিরিক ও যৌণ নির্যাতনের অভিযোগে থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মাইনুল ইসলামকে এবং দায়িত্বে অবহেলার কারণে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল আহসানকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে। জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, এর আগে রবিবার এ ঘটনার তদন্তে রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয় থেকে কমিটি গঠণ করা হয়। তিনদিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা গত ২৬ জুন বাসুদেব চক্রবর্তী নামের এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বরুণ চক্রবর্তী ওই এলাকার মিনতি বিশ্বাস ওরফে মিতু অধিকারীকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ওই নারীর সাথে তার ভাইয়ের পরকীয়া সম্পর্ক ছিলো। মামলার পর সেই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। থানা পুলিশ তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলে
৩০ জুন বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম উজিরপুর আমলী আদালত তাকে দুইদিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ড শেষে গত ২ জুলাই আদালতে তোলার পর নারী আসামি রিমান্ডে নিয়ে তাকে যৌণ ও শারিরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন। পরে বিচারক ওই নারীকে যথাযথ চিকিৎসা এবং তাকে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালককে নির্দেশ দেন ।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন নারী চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা প্রদান এবং শারীরিক ও যৌণ নির্যাতনের বিষয়ে যথাসময়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে কী উল্লেখ আছে, সে বিষয়ে তিনি (পরিচালক) কিছু বলেননি ।
উজিরপুর মডেল থানার প্রত্যাহার করা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল আহসান বলেন, রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করার পর অধিকাংশ আসামি নিজেদের রক্ষা করতে বিচারকের সামনে পুলিশের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যাচার করে থাকেন। মিনতি বিশ্বাস ওরফে মিতু অধিকারীও তেমনটাই করেছেন ।
ওসি আরও বলেন, অভিযুক্ত নারী আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মৃত্যুর পূর্বে বাসুদেব চক্রবর্তীর সাথে মিনতির পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। যার অনেক ছবিও পুলিশ উদ্ধার করেছে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরেই রাত ১২টার দিকে বাসুদেব মিনতির বাড়িতে যাওয়ার পর তার (বাসুদেব) মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ।