আপনি কাজ চালিয়ে যাবেন আপনার শিল্পী হৃদয়- রত্না কবির
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে সমাজসেবা অধিদফতরের স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিপুন আক্তারের রিটে প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এই আদেশ দেন। আদালতে নিপুণের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক।
সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ ও পলাশ চন্দ্র রায়। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলি নাই। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীদের নিয়ে অভিযোগ ছিল।
বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পদে যাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে, মনোয়ার হোসেন ডিপজল ভোটারদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করেছেন, টাকা-পয়সা দিয়েছেন এবং নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তাই আদালত সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। আদালত বলে দিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ যেন তাঁকে এই পদে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখে।” এ আইনজীবী ভাষ্য, ‘মনোয়ার হোসেন ডিপজলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে নির্বাচন বোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন নিপুন আক্তার।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিপজলকে চিঠিও দিয়েছিল নির্বাচন বোর্ড। কিন্তু এরপর আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় নির্বাচন হয় এবং নির্বাচনেও তারা কারচুপি করে.। ভোটার-অ্যাজেন্টদের বের করে দেওয়া, জাল ভোট দেওয়া, বৈধ ভোট বাতিল করার মত ঘটনা ঘটে। তখন এসব অভিযোগ উল্লেখ করে নিপুন আক্তার সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আরেকটি আবেদন করেছিলেন, অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে।কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তর সে বিষয়েও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যে কারণে তিনি হাইকোর্টে এসে রিট দায়ের করেছেন।’গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪–২৬ মেয়াদের নির্বাচন হয়। নির্বাচনে নিপুণ আক্তার-মাহমুদ কলি প্যানেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মিশা সওদাগর-মনোয়ার হোসেন ডিপজলের প্যানেল। ভোট গ্রহণ শেষে ২০ এপ্রিল সকালে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফলাফলে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর ২৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আর ১৭০ ভোট পান তার প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী মাহমুদ কলি।
অন্যদিকে মাত্র ১৬ ভোটের ব্যবধানে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের কাছে হেরে যান নিপুণ আক্তার। ডিপজল পান ২২৫ ভোট আর নিপুণ পান ২০৯ ভোট। ফলাফল ঘোষণার পর ডিপজল ও মিশাকে ফুলের মালা পরিয়ে অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন নিপুন। পরে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সমিতির নির্বাচনের (২০২৪-২৬) ফলাফল বাতিল এবং নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশনা চেয়ে গত ১৪ মে রিট করেন তিনি।
তবে এইসব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে সিনেপাড়ায়। শিল্পী সমিতিতে এর আগেও জায়েদ খান এর সাথে এমন কিছু ঘটেছিল। ডিপজলের সাথে শিল্পীদের সুসম্পর্ক অনেক আগে থেকেই। তাকে মোটামুটি সবাই পছন্দ করে। কিন্তু রিট হবার পর থেকেই সাধারণ সম্পাদক পদে পরাজিত প্রার্থী নিপুন আক্তার এর উপর ক্ষোপ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। পক্ষে বিপক্ষে দুর্দান্ত বাক্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হচ্ছে।
এদিকে চিত্রনায়িকা রত্না কবির মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে বিপুল ভোটে কার্যনির্বাহী সদস্য হয়েছেন। তিনি একটি ফেসবুক পোস্টে একটি মন্তব্য শেয়ার করেছেন। যেটি ডেইলি বাংলাদেশ টাইম এর পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হল।
শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক “মনোয়ার হোসেন ডিপজল”….. আপনি শিল্পীদের ভোটে নির্বাচিত!আপনি শিল্পীদের ভোটকে অসম্মান করবেন না……আপনার কাজ আপনি চালিয়ে যাবেন!আমরা আছি আপনার পাশে…..!আগামী দুই বছর শিল্পী সমিতির কল্যাণে যা যা করা লাগে আপনি করবেন!ঐ চেয়ারে বসেই আপনাকে কাজ করতে হবে এমন কোন কথা নেই…….!আপনার চেয়ার শিল্পী হৃদয়।অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।