ঢাকা বিভাগসারাদেশ

পিটিয়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠালেন পুলিশ কর্মকর্তা

Share this:

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কর্ণহার থানার এসআই শাহিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে এক অসুস্থ ব্যক্তিকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। আহত জহরুল ইসলাম (৪৮) নামের ওই ব্যক্তিকে পবা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার দুপুরে পবা উপজেলার কর্ণহার থানার তেতুলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত জহরুল ওই গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।

এছাড়া একই দিন এসআই শাহিনের বিরুদ্ধে জহরুলের সদ্য এসএসসি পাশ করা ছেলে নুরুল ইসলামকে থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর ছেলে নুরুলকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় থানা পুলিশ।

অভিযোগ উঠেছে, এসআই শাহিনের বিরুদ্ধে এর আগে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছিলেন জহরুল। এর ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।

আহত জহরুলের অভিযোগ, রোববার তার বোন তাজলেমার সঙ্গে বাড়ির জমি নিয়ে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় সেখানে হাজির হন কর্ণহার থানার এসআই শাহিন। তারপর শাহিন কোনো কারণ ছাড়া তাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে লাথি ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে পবা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

জহরুলের স্ত্রী নূরবানু বলেন, কিছুদিন আগে আমার স্বামী স্ট্রোক করেন। তিনি অসুস্থ। এরপরেও এসআই শাহিন আমার স্বামীকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছেন। স্বামীকে পেটানোর পরে এসআই শাহিন ছেলে নুরুল ইসলামকে আটক করেন। এ সময় প্রতিবাদ করতে গেলে ছেলেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

আহত জহরুল আরও জানান, মাস দুয়েক আগে বাড়ি নির্মাণ করছিলেন তিনি। এসময় এসআই শাহিন করোনার সময় বাড়ি নির্মাণ করা যাবে না বলে তার নিকট চাঁদা দাবি করেন। বাধ্য হয়ে একবার কিছু টাকা দেয়া হয়। কিন্তু দ্বিতীয়বার আবার টাকা চাইতে যান শাহিন। এসময় তিনি মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। এরপর এসআই শাহীনকে বদলির নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু করোনার কারণে তাকে কর্ণহার থানাতেই রাখা হয়। এ নিয়ে এসআই শাহিন তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।

জানতে চাইলে এসআই শাহিন বলেন, মারধরের অভিযোগ সঠিক না। আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কর্ণহার থানার ওসি আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, কাউকে মারধর করা তো দূরের কথা, কাউকে নির্যাতন করা যাবে না। পুলিশ জনগণের সেবক। এসআই শাহিনকে নিয়ে আমি বিব্রত। তার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মাকর্তাদের জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

প্রসঙ্গত, এসআই শাহিন আরএমপির চন্দ্রিমা থানায় চাকরিকালে তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা, কলেজছাত্রকে মাদক মামলায় ফাঁসানো, ছিনতাইকারীর মোটরসাইকেল ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাকে কর্ণহার থানায় শাস্তিমূলক বদলি করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *