রংপুর বিভাগ

টোল প্লাজায় যুবদলের হামলার অভিযোগ, আহত পাঁচ : ১৪ লাখ টাকা লুট

Share this:

লালমনিরহাটে তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও কর্মীদের মারধর করে দুটি ক্যাশবাক্স থেকে ১৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। হামলার এ ঘটনায় টোল প্লাজার পাঁচ কর্মী আহত হয়েছেন।

গতকাল বুধবার রাতের এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি মামলা করেছেন তিস্তা সড়ক সেতুর টোল আদায়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান রংপুর শহরের মেসার্স রানা কনস্ট্রাকশনের পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য মো. নাজমুল আলম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, টোল না দেওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে মাহফুজার রহমান ওরফে রাজু (৪০) নামের স্থানীয় এক যুবদল নেতার নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জনের একটি দল এই হামলা চালায়।মামলার প্রধান আসামি মাহফুজার রহমান ওরফে রাজু লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুণ্ডা ইউনিয়নের মোস্তফি এলাকার আবদুস সামাদ ব্যাপারীর ছেলে। তিনি গোকুণ্ডা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মামলার এজাহারে মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরো ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেল ৩টায় যুবদল নেতা মাহফুজার রহমান (৪০), ফজলুর রহমান (৩৫) ও আবদুর রহিম (৪২) মোটরসাইকেলযোগে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুণ্ডা ইউনিয়নে অবস্থিত তিস্তা সড়ক সেতু পার হচ্ছিলেন। তারা টোল প্লাজায় এসে টোল না দিয়ে মোটরসাইকেল দ্রুত চালিয়ে যেতে থাকলে তাদের থামানোর জন্য সংকেত দেন টোল প্লাজার কর্মীরা। তারা টোল দেবেন না, এমনকি তাদের আরো যত গাড়ি আছে, সেই গাড়িগুলোও টোল দেবে না বলে তারা হুমকি-ধমকি দেন। এ সময় তাদের সঙ্গে টোল প্লাজার কর্মীদের কথা-কাটাকাটি হয়।

ওই ঘটনার পর রাত ৮টার দিকে মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে মামলার এজাহারভুক্ত আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ২০-২৫ জনের একটি দল দা, ছোরা, রড ও দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মোটরসাইকেল ও অটোযোগে মোস্তফির দিক থেকে তিস্তা টোল প্লাজায় হামলা করেন। হামলাকারীরা কর্মচারীদের মারধর করেন। এ সময় টোল প্লাজার কর্মচারী মো. জুয়েল ইসলামকে (৩৭) মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টোল প্লাজার ক্যাশবাক্স থেকে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রধান আসামি মাহফুজার ছিনিয়ে নেন। 

এ সময় টোল প্লাজায় কর্মরত কর্মীরা প্রাণভয়ে দৌড়ে পাশে থাকা আরেক ক্যাশঘরে প্রবেশ করেন। তখন সেখানেও হামলা চালানো হলে টোল প্লাজার ম্যানেজার সুরুজ্জামান (৪০) গুরুতর আহত হন।সুরুজ্জামানের ক্যাশবাক্স থেকে মিঠু (৩৮) ও আবদুর রহিম (৪২) নামের দুজন ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সুরুজ্জামান (৪০) ও জুয়েল ইসলাম (৩৭) রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া টোল প্লাজার আরো দুই কর্মী মোসলেম উদ্দিন (৪০) ও আক্কাস আলী রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আহত আরেক কর্মী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন, তার নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

মামলার বাদী নাজমুল আলম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যারা হামলা, মারধর ও ১৪ লাখ টাকা ছিনতাই করেছেন, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যা-ই হোক না কেন, তাদের মূল পরিচয় এখন অপরাধী ও সন্ত্রাসী। তারা টোল প্লাজার কর্মীদের বিনা দোষে বিনা উসকানিতে মারধর করে গুরুতর আহত করেছেন। ১৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ১৪ লাখ টাকা উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।’

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, ‘তিস্তা সেতুর টোল প্লাজায় হামলার সংবাদ পেয়ে বুধবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্তের পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তার ও ছিনিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *