দেশের শহর গ্রামে পাওয়া যাচ্ছে নতুন ধরণের ইয়াবা, নাম ‘ট্রিপল নাইন’
(জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, সোয়েব সিকদার )- থাই নাম ยาบ้า; অর্থ পাগলা ঔষধ একধরনের নেশাজাতীয় ট্যাবলেট। এটি মূলত মেথঅ্যাম্ফিটামিন ও ক্যাফেইন এর মিশ্রণ। কখনো কখনো এর সাথে হেরোইন মেশানো হয়। এটি সাধারণত “বাবা, গুটি, বেদোনা, ইশতুপ, আপেল, পাথর, দানা, পোক, বিচি, বিমান,ট্রেন,নৌকা, ঘোড়া এবং কালোজোরি” নামেও পরিচিত। এই মাদকটি থাইল্যান্ডে বেশ জনপ্রিয়। পার্শ্ববর্তী দেশ বার্মা থেকে এটি চোরাচালান করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ, সৌদি আরব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই এই মাদকের বিস্তার ঘটেছে।
জেনে রাখা আবশ্যক যে এ ট্যাবলেটটি মূলত হিটলার এর সময়ে নাৎসি সেনাদের বড়ি হিসেবে সেবন করানো হত যেন যুদ্ধ চলাকালিন তারা ২৪ ঘন্টার অধিক সময় জেগে থাকতে পারে, কিন্তু বর্তমানে ট্যাবলেটটি বিভিন্ন দেশে মাদক দ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইয়াবার প্রধান উপাদান মেথঅ্যাম্ফিটামিন ও ক্যাফেইন। এটি উত্তেজক (স্টিমুল্যান্ট) মাদক দ্রব্য। মেথঅ্যাম্ফিটামিন জাতীয় মাদক ডাক্তারের অনুমতিতে এডিএইচডি[৪] জাতীয় রোগে কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ হিসাবে দেওয়া হতে পারে, তবে ইয়াবা ওষুধ হিসাবে ব্যবহারের মত বিশুদ্ধও নয় এবং উত্তেজক নেশার ভয়ানক মাত্রা ও স্বাস্থ্যের ক্ষতির জন্য এটি ওষুধ হিসাবে সেবনের উপযুক্ত নয়। ইয়াবা সেবনের সাথে সাথে পুরো শরীরে এবং মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে, ইয়াবার রাসায়নিক উপাদান সমুহের প্রভাব অনুভূত হতে থাকে।
বাংলাদেশে ইয়াবার আবির্ভাব ঘটে ১৯৯৭ সালে। পরবর্তীতে ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মায়ানমার থেকে ইয়াবা আসতে শুরু করে। এই ট্যাবলেটের দাম তুলনামূলকভাবে দাম কম হবার কারণে গরিব মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্তদের মাঝেই এটি মূলত বিস্তার লাভ করে।

বাংলাদেশে ইয়াবা নানা ধরণের পাওয়া যায়।তবে সম্প্রতি নতুন এক ইয়াবার ধরণ পাওয়া গিয়েছে ,নাম ‘ট্রিপল নাইন’। যদিও এই নামের ইয়াবা এখন পর্যন্ত মাদক পাচারকারী ও আসক্তদের কাছে খুব বেশি হাতে পৌঁছায়নি বলে এক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
তবে দ্রুতই এই নতুন মাদকের ধরণ খারাপ ধারণ করতে পারে বলে মন্তব্য করছেন সমাজসেবকরা। নতুন ধরণের ইয়াবা ‘ট্রিপল নাইন’ কতটা বাজে প্রভাব ফেলতে পারে এই বিষয় জানতে কথা হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর এর নাম প্ৰকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র সদস্যর সাথে তিনি বলেন , বর্তমানে মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে সবাই চিন্তিত, সরকার চেষ্টা করছে এটি নিয়ন্ত্রন করার তবে এটি আদতে নিয়ন্ত্রন নেই বলে জানি। নেশাদ্রব্য মাদকের সব ধরণেই খারাপ তবে এর মধ্যে ইয়াবা চলে গেছে অন্য পর্যায়। এই মাদক না থামাতে পারলে সামনে ভয়াভয় অবস্থা হবে। নতুন ভেরিয়েন্ট ইয়াবা এরই মধ্যে শহর বন্দর গ্রামে চলে গিয়েছে।সবাইকে এই মাদকের বিরুদ্ধে লড়তে হবে ।দেশের যুব সমাজকে বাঁচাতে হবে।
সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী বাবু জানান , দেশে মাদকের বিরুদ্ধে আইন যতটা কড়া তেমনি আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে অনেকেই। বাংলাদেশে মাদকের যে অভিযান চলমান রয়েছে সেটি অব্যাহত থাকুক। দেশের বিভিন্ন জেলা শহর, বন্দরে ও গ্রামে মাদকের ভয়াবহতা বাড়ছে। আর দেশের বড় মাদক এখন ইয়াবা। ছোট বড় বয়স্ক মোটামুটি একটা অংশ এই মাদকের সাথে আসক্ত। এটি যেভাবেই হোক থামাতে হবে নাহলে এর ফল খুবই খারাপের দিকে যাবে।
সমাজসেবক ও মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব মশিউর রহমান বলেন , আমার জেলা বাউফলে এই মাদকের ছড়াছড়ি। বেশ কিছু বছর ধরে দেখছি ওপেনে মাদক বেচাকেনা হচ্ছে। প্রশাসন অনেকটাই বাঘের থেকে এটি নির্মূল করার চেষ্টা করছে। তবে ইয়াবার এই নতুন ধরন একটা জেনারেশনকে শেষ করে দিতে পারে। সরকারের কঠিন দৃষ্টি কামনা করছি।