সুগন্ধায় বালু ও মাটি কাটায় হুমকিতে দোয়ারিকা সেতু
(বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি)-বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সুগন্ধা নদী থেকে রাতের আঁধারে বালু ও পাড়ের মাটি অবৈধভাবে কেটে ইটভাটায় নেওয়ায় হুমকির মুখে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতু ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বালু ও নদীর পাড় কেটে এসব মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছেন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে দোয়ারিকা সেতু ও নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ।
উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের দোয়ারিকা গ্রামে ২০টিরও বেশি ইটভাটার মালিক স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে এসব মাটি নিয়ে যাচ্ছেন ইটভাটায়।বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারুক আহমেদ দোয়ারিকা এলাকায় ৩টি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
এ সময় সনি ব্রিকস থেকে ১ লাখ, রাখি ব্রিকস ৫০ হাজার ও ইসলাম ব্রিকস ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ২ লাখ টাকা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।জানা গেছে, নদীপাড়ের ও ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় আনায় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার প্রভাবশালীদের যোগসাজশে প্রতি বছর সুগন্ধা নদীর পাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের দোয়ারিকা গ্রামে ২৪টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটায় মাটি সংকট থাকায় তারা মাটিকাটা চক্রের সঙ্গে আঁতাত করে নদীভাঙন এলাকা থেকে রাতের আঁধারে মাটি কেটে ইটভাটা আনছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাটি কাটার জন্য ইঞ্জিনচালিত ট্রলার দিয়ে নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে ইটভাটায়। প্রতিরক্ষা বাঁধ কেটে তৈরি করা হয়েছে সমতল রাস্তা।
বীরপ্রতীক মুক্তিযোদ্ধা রতন আলী শরীফ বলেন,আমরা বারবার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি; কিন্তু উপজেলা প্রশাসন থেকে একাধিকবার নিষেধ করার সত্ত্বেও তারা কোনো কথা শুনছে না।বন্যা হলে বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে থাকি।
দোয়ারিকা ইটভাটার (ব্রিকসের) মালিকরা বলেন, কেউ ইটভাটায় মাটি নিয়ে এলে তাদের কাছ থেকে আমরা মাটি কিনি। কোনো ইটভাটা মালিক নদী ভাঙনে এলাকা থেকে এবং রাতের আঁধারে মাটি চুরি করার কথা অস্বীকার করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ জানান, নদী থেকে বালু উত্তোলন ও নদীর পাড়ের মাটি কাটা বা বিক্রি করা সম্পূর্ণ অবৈধ।কেউ যদি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু ও নদীর পাড়ের মাটি নিয়ে যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

