বরিশালে এনজিও পরিচালকের কারাদন্ড ॥ জরিমানা
বরিশাল ব্যুরো : বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে অবৈধভাবে নিজের খামারের ছয়টি হরিণ জবাই করে মাংস পাচারের সময় একটি এনজিও থেকে ছয়টি হরিণের চামড়া উদ্ধারসহ ৩৭কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করেছে পুলিশ ।
একই অভিযানে এনজিও আলোশিখার পরিচালক জেমস মৃদুল হালদার ও তার তিন কর্মচারীসহ চারজনকে আটক করা হয়। ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের। আটককৃতদের বুধবার বিকেলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন করে হরিণ পালনের লাইসেন্স বাতিল করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবুল হাশেম ।
ভ্রাম্যমান আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবুল হাশেম জানান, বুধবার দুপুরে তিনি ঘটনাস্থল এনজিও আলোশিখা পরিদর্শন করে খামারের মালিক ও এনজিও পরিচালক জেমস মৃদুল হালদারকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই আদালত অভিযুক্ত মৃদুল হালদারের কর্মচারী সুনীল চন্দ্র হালদার ও খোকন সরকারকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। ওই আদালত অপর কর্মচারী বিপ্লব সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। পাশাপাশি উদ্ধারকৃত ছয়টি হরিণের চামড়া উপজেলা বন কর্মকর্তা মনীন্দ্র নাথ রায়ের জিম্মায় রাখার রায় প্রদান করেছেন ।
দন্ডিত কর্মচারী সুনীল চন্দ্র হালদার ও খোকন সরকার এবং মৃদুল হালদার জরিমানার টাকা আদালতে জমা প্রদান করেছেন বলে জানিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালতের পেশকার সিদ্দিকুর রহমান। ওই দুই কর্মচারী অর্থদন্ড জমা দিয়ে মুক্ত হয়েছেন। পাশাপাশি আদালত উদ্ধারকৃত হরিণের মাংস জ্বালানী দিয়ে পুড়িয়ে বিনস্ট করে তা মাটির গর্তে ঢেকে রাখার আদেশ দিয়েছেন ।
সূত্রমতে, জীববৈচিত্র্য, বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা বিধানকল্পে প্রণীত আইনে নিয়মিত মামলা দায়ের না করে টক অব দ্যা টাউনের ঘটনায় ভ্রাম্যমান আদালতে বিচারের ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। এরপূর্বে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে দশটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার ওসি মোঃ গোলাম ছরোয়ারের নেতৃত্বে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হরিণ খামারের মালিক জেমস্ মৃদুল হালদারসহ চারজনকে আটক করেছে। এসময় পাচারের উদ্দেশ্যে ৩৭টি পলিথিনে রাখা ৩৭ কেজি হরিণের মাংস ও ছয়টি হরিণের চামড়া জব্দসহ জেমস্ মৃদুল হালদার ও তার তিন কর্মচারীকে আটক করা হয় ।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নিজের এনজিও’র মধ্যে সু-বিশাল হরিণের খামার করে দীর্ঘদিন থেকে জেমস মৃদুল প্রায়ই গোপনে হরিণ জবাই করে মাংস বিক্রি করে আসছিলেন। এছাড়াও খামারের মালিক মৃদুল হালদার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে হরিণ বিক্রি করে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছিল ।