খেলা

ফাইনালে ট্রাম্পকার্ড হতে পারেন যারা

Share this:

(জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,অরণ্য শোয়েব সিকদার) আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে রাত সাড়ে ৮টায় মাঠে নামছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলছে। অন্যদিকে ২০১৪ সালের পর আরও একবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত। দীর্ঘ এক যুগের শিরোপা খরা কাটাতে মরিয়া রোহিত শর্মার দল। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ নিতে চায় প্রোটিয়ারা। কার হাতে উঠবে সোনালি রঙের ট্রফি। কে হাসবে শেষ হাসি; তা নিয়ে জল্পনা আছে অনেক। তবে বিশ্বকাপে দু’দলেই আছে এমন কিছু ক্রিকেটার যারা এই ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারলে প্রতিপক্ষের সর্বনাশ হতে বাধ্য। 

এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত এক ম্যাচও হারেনি ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দু’দলকেই পথ দেখিয়ে এতদূর নিয়ে এসেছেন দলের ক্রিকেটাররা। তবে তাদের মধ্যে এমন হাতে গোনা কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন যাদের ওপরই মূল ভরসা করতে হয়েছে দু’দলকে। এখন তাদের ওপর আরও একবার তাকিয়ে দল দুটির সমর্থকরা। কেননা, বিশ্বকাপ জেতাতে ফাইনালে এই ক্রিকেটারদের জ্বলে উঠার বিকল্প নেই। তবে এর বাইরে যে কেউই নজরটা নিজের দিকে টানতে পারেন। তবে ভারতীয় দর্শকরা মূলত তাকিয়ে আছে রোহিত শর্মা, রিশভ পান্ত, জাসপ্রিত বুমরাহ ও কুলদীপ যাদবের দিকেই। আর দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থকরা তাকিয়ে কুইন্টন ডি কক, ডেভিড মিলার, এনরিট নর্টজে ও কাগিসো রাবাদার দিকে। নিজেদের দিনে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে দু’দলের এই ৮ ক্রিকেটারেরই।

রোহিত শর্মা
ভারতের অধিনায়ক ও ওপেনার। নিজের দিনে প্রতিপক্ষের বোলারদের ঘুম হারাম করে দিতে পারেন রোহিত। আগ্রসী ব্যাটিং চালিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেওয়ার দায়িত্বটা বেশ মনদিয়েই করছেন তিনি। ব্যক্তিগত মাইলফলক নয় রোহিত ব্যাট করছেন দলকে ভালো অবস্থানে দাঁড় করিয়ে রেখে আসার জন্য। যেই সুবিদা পেয়ে পরে ভারতও ম্যাচে জয় তুলছে। তাছাড়া রোহিত নিজেও আছেন দুর্দান্ত ছন্দে। এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ৪১ গড়ে তার রান ২৪৮।  যেখানে স্ট্রাইকরেট ১৫৫। তাই ফাইনালেও দলের কাণ্ডরি হতে পারেন কোহলিই।

রিশভ পান্ত
রিশভ পান্ত যেন ক্রিকেটের এক বিষ্ময়। ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনা থেকে যেভাবে তিনি ক্রিকেটে ফিরে এসেছেন তা এক কথায় ফিনিক্স পাখির গল্পের মতো। সেই তিনি এবার ভারতের হয়ে আছেন দুর্দান্ত ছন্দেও। ৭ ম্যাচে ৪২ গড়ে তার রান ১৭১। যেখানে তার স্ট্রাইকরেট ১২৯। অর্থাৎ ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে ব্যাট করেন তিনি। যখন যেই পরিস্থিতি ডিমান্ড করে সেই অনুযায়ী ব্যাট চালিয়ে দলকে সাফল্য এনে দেন তিনি।

জাসপ্রিত বুমরাহ
কিপটে বোলিং ও প্রয়োজনের সময় দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ায় বুমরাহর বিকল্প এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কমই আছে। বিশ্বকাপটাও দারুণ কাটছে তার। ৭ ম্যাচে মাত্র ৪.১২ ইকোনোমিতে বুমরাহর উইকেট সংখ্যা ১৩। নিজের দিনে প্রতিপক্ষকে একাই ধসিয়ে দিতে পারেন বুমরাহ। ফাইনালেও নিশ্চয় সেটি করে দেখাতে চাইবেন তিনি।

কুলদীপ যাদব
ঘূর্ণিতে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের কাবু করে দিতে পারেন কুলদীপ। এবারের বিশ্বকাপে ৪ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ১০টি। যা প্রমাণ করে উইকেট নিতে কতটা পটু কুলদীপ। সবশেষ সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে তো বলতে গেলে একাই ধসিয়ে দিয়েছেন কুলদীপ। ফাইনালেও তাই তার ওপরই ভরসা করে থাকবে ভারত। 

কুইন্টন ডি কক
বিশ্বকাপটা দারুণ কাটছে ডি ককের। এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচে তার রান ২০৪। ব্যাট করেছেন ১৪৩ স্ট্রাইকরেটে। ওপেনিংয়ে নেমে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন তিনি। প্রতিপক্ষের বোলারদের সকল পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারেন একাই। ডি ককের সেই রূপটা দেখার অপেক্ষাতেই এখন প্রোটিয়ারা।

ডেভিড মিলার
চলতি বিশ্বকাপে মিলার যেন নিজেকে চেনাচ্ছেন ভিন্ন রূপে। যেই মিলার প্রতিপক্ষকে একাই ধসিয়ে দিতেন বলে খ্যাতি অর্জন করেছেন কিলার মিলার হিসেবে। সেই তিনি এবার ব্যাট করছেন দলের পরিস্থিতি বুঝে। হাল ধরছেন দলের বিপদে। এরপর শেষ দিকে চড়াও হয়ে দলকে ম্যাচ জেতাচ্ছেন। বিশ্বকাপে ৭ ইনিংসে তার রান ১৪৮। ফাইনালেও তাই তার দিকেই নজর থাকছে সবার।

এনরিচ নর্টজে
গতি ও বাউন্সারে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের মনে ত্রাস সৃষ্টি করতে পারেন এই প্রোটিয়া পেসার। টুর্নামেন্টটাও দারুণ কাটছে তার। এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচে তার শিকার ১৩ উইকেট।  ফাইনালেও তাই তার জ্বলে উঠার অপেক্ষাতেই থাকবে প্রোটিয়ারা।

কাগিসো রাবাদা
সময়ের অন্যতম সেরা পেসারদের একজন তিনি। গতির সঙ্গে সুইংয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের কাবু করতে ভালোই জানা আছে রাবাদার। ভারতীয় বিশ্বসেরা ব্যাটিং আক্রমণভাগকে একাই গুড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি। সেটা নিশ্চয় ফাইনালেও আরও একবার করে দেখাতে চাইবেন রাবাদা। কেননা, প্রোটিয়াদের শিরোপা জিততে যে রাবাদাকেই নিতে হবে বড় দায়িত্বটা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *