পরামর্শে বাড়ছে বিভ্রান্তি
করোনাভাইরাস নিয়ে জনমনে আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস থেকে পরিত্রাণের নানা পরামর্শ ও ফর্মুলা। বিভিন্ন পেশার মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিন হাজারও পরামর্শ দিচ্ছেন। কিছু চিকিৎসকও এর সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, বড় বড় দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক, রাষ্ট্রপ্রধানও এমন সব পরামর্শ দিচ্ছেন যার বেশির ভাগেরই কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বিশ্ব স্থাস্থ্য সংস্থা একবার বলছে, মাস্ক ব্যবহার করতে হবে না। আবার বলছে সংক্রমণ রোধে মাস্ক ব্যবহার উপকারী। একদল বলছে, এই ওষুধ খাওয়া যাবে, অন্য দল বলছে খাওয়া যাবে না। কেউ বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য দিচ্ছে, কোনো সংস্থ্যা তথ্য দিচ্ছে সরকারকে খুশি করতে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ ধরনের পরামর্শ অব্যাহত আছে। এতে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়ছে। এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে লকডাউন পরিস্থিতির ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ রোধে বড় এলাকা নিয়ে অবরুদ্ধ করতে হবে। ঢাকার বাইরে বিশেষজ্ঞদের পরমার্শ অনুযায়ী লকডাউন শুরু হয়েছে। কিন্তু ঢাকার বাস্তবায়ন সংস্থাগুলো বলছে, সংক্ষিপ্ত এলাকা নিয়ে করতে হবে। এ নিয়ে চলছে সময়ক্ষেপণ। এর মাঝে পড়ে রাজধানীর মানুষ অবাধে চলাচল করছে। ফলে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। করোনার মুক্তিতে নানা ধরনের পরামর্শ, যুক্তি প্লাটা যুক্তির জাঁতাকলে পড়ে জনজীবনে বিভ্রান্তি ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাসটি সম্পূর্ণ নতুন। এর ক্ষমতা, স্থায়িত্ব, শক্তি, সংক্রমণ প্রকাশের ধরন, প্রতিরোধের ওষুধ সম্পর্কে প্রায় কেউ তেমন কিছুই জানে না। এটা নিয়ে আগে গবেষণাও হয়নি, সবে মাত্র শুরু হয়েছে। ফলে ভাইরাসটি সম্পর্কে কিছুই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এ সুযোগে সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের পাশাপাশি দেশীয় গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ হচ্ছে। এর মধ্যে মাস্ক ব্যবহার কার যাবে কি যাবে না, ম্যালেরিয়ার ওষুধেই চলবে করোনা চিকিৎসা, রোগমুক্তির অন্যতম উপায় গোমূত্র পান, বাঁচতে হলে গ্লাভসের ব্যবহার আবশ্যক, প্লাজমা থেরাপিই সর্বোত্তম চিকিৎসা, হোমিওপ্যাথিক ওষুধেই উপশম, শরীরের ব্লিচিং পাউডার স্প্রে করলে জীবাণুমুক্ত হওয়া যায়, গরম পানি খেলে ও গরম পানি দিয়ে গোসল করলে করোনা হবে না- এমন নানা ধরনের তথ্য ছড়ানো হয়েছে। এর প্রায় সবই অনুমাননির্ভর, কোনোটাই গবেষণানির্ভর তথ্য নয়। যে কারণে একবার বলা হচ্ছে এটা করতে হবে, কিছুদিন পর বলা হচ্ছে করা যাবে না। দেশের জনগণকে বাঁচাতে অনেক রাষ্ট্রের প্রধানও এ ধরনের পরামর্শ দেয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছেন। এমনকি কোন এলাকা লকডাউন হবে কি হবে না, কতটুকু হবে সেটি নিয়েও বিভ্রান্তির শেষ নেই। করোনায় আতঙ্কগ্রস্ত বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী এ ধরনের পরামর্শের জালে জড়িয়ে কি করবে কি করবে না সে বিষয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছে।
এসব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ Daily Bangladesh Timeকে বলেন, করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রোগটি নতুন হওয়ায় সঠিক তথ্য নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোরও কিছু সময় লেগেছে। যেমন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথমে বলেছিল, সবার মাস্ক পরার দরকার নেই। কিন্তু পরে ব্যাপক হারে রোগটি ছড়াতে শুরু করলে তারা মাস্কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দেন। এছাড়া রোগটির চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ না থাকায় অনেক ওষুধ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। অধ্যাপক আবদুল্লাহ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের ভ্রান্ত তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এসব নিয়ে অনেকের মধ্যে হুজুগ দেখা যাচ্ছে। তিনি হুজুগে মাতাল হয়ে এসব ভ্রান্ত তথ্য বাস্তব জীবনে প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, করোনা থেকে মুক্তি পেতে বাসায় কোনো ওষুধ মজুদ করা যাবে না। এমনকি অনেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্লাজমা মজুদের চেষ্টা করছেন সেটিও করা যাবে না। সব ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। তাই যে কোনো ওষুধ খাওয়ার আগে নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন তিনি।
করোনা নিয়ে যত বিভ্রান্তি, ফের মাস্ক পরার পরামর্শ : নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসমাগমের জায়গায় বের হওয়ার সময় মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যদিও কিছুদিন আগে ‘সুস্থ ব্যক্তি ফেস মাস্ক পরতে হবে, এ নিয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই’ বলে জানিয়েছিল বিশ্ব সংস্থাটি। এবার সেই বক্তব্য থেকে সরে এলো তারা। নতুন এক গবেষণায় সম্ভাব্য কোভিড-১৯ রোগীর মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে মাস্ক বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলে দেখা গেছে। ৬ জুন এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
করোনা চিকিৎসায় গোমূত্র পান : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় গোমূত্র পানের কথাও বলা হয়েছে কোনো কোনো দেশে। গত এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসজনিত রোগের চিকিৎসায় গোমূত্র ও গোবর ব্যবহার করা যেতে পারে। গোমূত্র ও গোবর গ্রহণ করলে সংক্রামক করোনাভাইরাসের প্রভাব বন্ধ হয়ে যাবে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, গোবর বা গোমূত্রে ভাইরাস থেকে মুক্তি তো মিলবেই না বরং আরও বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ঘটতে পারে।
গরম আবহাওয়া : গরম আবহাওয়াতেও ছড়াতে পারে না কোভিড-১৯। এটা ঠিক যে অনেক সংক্রামক রোগ, বিশেষ করে ফ্লু, শীতের মাসগুলোতেই বেশি হয়। ডিসেম্বরে প্রথম যখন চীনের করোনাভাইরাস ছড়ায় তখন সেখানে বেশ ঠাণ্ডা ছিল। পরে যেসব দেশে এই ভাইরাস ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে, সেগুলোর অনেকগুলোই শীতপ্রধান। ফলে একটি সাধারণ ধারণা তৈরি হয়েছে যে গরম পড়লেই এই ভাইরাস মরে যাবে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, যেহেতু ভাইরাসটি নতুন, সুতরাং নিশ্চিতভাবে বলা এখনও সম্ভব নয় যে, গরম- স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় এই ভাইরাস বাঁচে না। বরং এখন পর্যন্ত যেসব প্রমাণ বিজ্ঞানীদের হাতে রয়েছে, তাতে যে কোনো জায়গায়, যে কোনো আবহাওয়াতেই কোভিড-১৯ ভাইরাস বিস্তারের ক্ষমতা রাখে।
অনেকেই আশা করছেন বেশি গরম পড়লেই করোনাভাইরাসের উপদ্রব কমে আসবে। তবে শুধু গরম পানিতে গোসল করলেই কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব নয়। গবেষকরা বলছেন, বেশি গরম পানিতে গোসল করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
করোনা ঠেকাতে রসুন : সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতে এই ভাইরাস ঠেকাতে রসুন খাওয়ার বহু পরামর্শও দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ডব্লিউএইচও বলছে, এই ধারণা ঠিক নয়। রসুন স্বাস্থ্যকর একটি খাবার যার ভেতর জীবাণুনাশক কিছু উপাদান হয়তো রয়েছে। কিন্তু নতুন এই করোনাভাইরাস ঠেকাতে রসুন কাজ করবে- এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আদৌ নেই।
মশার কামড়ে ছড়ায় : এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ বিজ্ঞানীদের হাতে নেই যে, মশার কামড়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাস একজনের দেহ থেকে অন্যের দেহে যেতে পারে। নতুন এই করোনাভাইরাস শ্বাসযন্ত্রকে আক্রমণ করে এবং আক্রান্ত মানুষের হাঁচি-কাশি, থুতুর মাধ্যমেই তা অন্যের শরীরে ঢোকে। যে কারণে হাঁচি-কাশির পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে চলাচল করতে।
ব্লিচিং বা অ্যালকোহল ছিটানো : করোনাভাইরাসমুক্ত হতে একটি টানেলের মধ্যে ব্লিচিং পাউডার গুলিয়ে সেটি শরীরে ছিটানো ব্যবস্থা করা হয় এমন তথ্যের ভিত্তিতে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে যদি একবার ভাইরাস ঢুকে যায়, তাহলে অ্যালকোহল, ব্লিচিং বা ক্লোরিন ছিটিয়ে কোনো লাভ নেই। বরং তাতে চোখ বা মুখের ক্ষতি হতে পারে, এমনকি চর্মরোগ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
নিউমোনিয়ার টিকা কোভিড-১৯ ঠেকাবে : এখন যে যে ধরনের নিউমোনিয়ার টিকা বাজারে রয়েছে, সেগুলো নতুন এই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে না। করোনাভাইরাসের জন্য সম্পূর্ণ নতুন টিকা তৈরির কাজ চলছে।
লবণ-পানি দিয়ে নাক ধুলে কি কাজ হবে : লবণমিশ্রিত পানি দিয়ে নিয়মিত নাক ধুয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচা যায়- এমন কোনো প্রমাণ এখনও নেই। তবে এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
করোনা চিকিৎসায় আ্যন্টিবায়োটিক : নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিবায়োটিক করোনাভাইরাস কেন কোনো ভাইরাসের ক্ষেত্রেই কাজ করে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাস একটি ভাইরাস এবং এটা ঠেকাতে বা এর চিকিৎসায় কোনোভাবেই অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ঠিক নয়। যদিও এটির চিকিৎসায় নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে পরামর্শ দিয়েছেন অনেক চিকিৎসক। যা দেখে অনেকে বাসায় এসব ওষুধ মজুদ করেছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি আপনি কোনো ব্যাকটেরিয়াতেও আক্রান্ত হন, তাহলে আপনাকে হয়তো অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হতে পার। এজন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিজে নিজে কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না।
করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা : করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাইরে বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে প্লাজমা থেরাপি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একই সঙ্গে বহুল আলোচিত রেমডেসিভিরসহ অন্যান্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের চূড়ান্ত ব্যবহার না করার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাটি। গত ২৭ মে করোনা গাইডলাইনে এ পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু একদল চিকিৎসকের বক্তব্যের কারণে অনেকে ধারণা করছেন প্লাজমা দিলে রোগী ভালো হবে। এমনকি এ কারণে অনেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে বাসায় সংরক্ষণ করতে শুরু করেছে। যাতে নিজে বা পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনের সময় তা ব্যবহার করা যায়।
এর আগে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থাটি করোনার চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া রোধী ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন এবং ক্লোরোকুইন ব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দেয়। সংস্থাটি বলছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ মানুষের শরীরে মৃদু এবং ৪০ শতাংশের মাঝারি উপসর্গ দিয়ে রোগটির শুরু হয়। নিজ দেশে এই ক্লোরোকুইন’র ব্যবহার নিয়ে দেশটির সরকারপ্রধান বেশ তৎপর ছিলেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষকদের পরামর্শের পর তিনি এই ওষুধ ব্যবহারের পক্ষে নিজের অবস্থানে অটল থাকেন। এতেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।
প্রাকৃতিকভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে : নোভেল করোনাভাইরাস বিশ্বে ভ্যাকসিন আসার আগেই প্রাকৃতিকভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ এবং বাকিংহাম মেডিকেল স্কুলের ডিন ক্যারোল সিকোরা। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে তিনি এই মন্তব্য করেছেন। তবে রোগতত্ত্ববিদরা বলেছেন, ভাইরাসটির জিনমসিকয়েন্সিং বিশ্লেষণ করে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভাইরাস বিশেষজ্ঞ এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, এসব বিভ্রান্তি দেশি এবং বিদেশি গণমাধ্যম থেকে সবচেয়ে ছড়িয়েছে। যার সঙ্গে কিছু সিনিয়র চিকিৎসক এবং বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান জড়িত। রোগটি নতুন হওয়ায় এবং কোনো প্রতিষেধক না থাকায় বিভ্রান্তি বেশি ছড়িয়েছে। তাছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যগত ক্রটি দেখা গেছে। তবে অসমর্থিত প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য বিশ্বাস না করতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, সারাবিশ্বে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে, এতে আক্রান্ত হয়েছে ৮৪ লাখের বেশি মানুষ। মারা গেছেন ৪ লাখ ৫১ হাজার। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রতিষেধক কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শতাধিক ভ্যাকসিন তৈরির প্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব ভ্যাকসিনের মধ্যে অন্তত ৬টি প্রথম ধাপের ট্রায়াল সফল হওয়ায় দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।