বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ কনস্টেবলের,আসামি ধরতে গড়িমসি
সিলেটে বিয়ের প্রলোভনে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ দেওয়ার ২১ দিন পর অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।এর আগে গত ২৭ মার্চ কোতোয়ালি থানায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী। এ বিষয়ে সিলেটের ডিআইজি, পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগও দেন তিনি।
এদিকে মামলাটি রেকর্ড করা হলেও আসামি গ্রেফতারে পুলিশ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী নারীর। তিনি বলেন, অভিযোগ দেওয়ার এক মাস পর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু মামলাটি রেকর্ড করার চারদিন পরও আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি। আসামি পরিচয় গোপন করে পাসপোর্ট তৈরি করে বিদেশে যাওয়ার জন্য ভিসা পেয়েছেন। ফলে যে কোনা সময় দেশত্যাগ করতে পারেন তিনি।
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল আবু সাঈদ (৩০) সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার গণারগাঁও গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে। তিনি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার আওতাধীন একটি পুলিশ ক্যাম্পে কর্তব্যরত ছিলেন। বর্তমানে জেলা পুলিশ লাইনসে রয়েছেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এখন তাকে গ্রেফতারের দায়িত্ব মামলার তদন্ত কর্মকর্তার।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলে গ্রেফতার করা হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুনে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় পুলিশ কনস্টেবল আবু সাঈদের। ওই নারী সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার এলাকার বাসিন্দা।
অভিযোগে ভুক্তভোগী নারী উল্লেখ করেন, তিনি স্বামী পরিত্যক্তা ও তিন সন্তানের জননী জেনেও সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন আবু সাঈদ। একপর্যায়ে বিভিন্ন লোভ-লালসার ফাঁদে ফেলে ভুক্তভোগীর বাসায় আসা-যাওয়া শুরু করেন। সেই সুযোগে তাকে ধর্ষণ করেন ওই পুলিশ সদস্য। পরে বিয়ে করে বিদেশ যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন। পরবর্তী সময়ে ভুক্তভোগী নারীর সহায়তায় একটি পাসপোর্টও তৈরি করেন আবু সাঈদ।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার ভিসার অনুমতি পেয়ে আবু সাঈদ ভুক্তভোগীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেন। এসময় ভুক্তভোগী নারী বিয়ের জন্য চাপ দিলে নানা টালবাহানা শুরু করেন সাঈদ। বিষয়টি পুলিশকে অবগত করার কথা বললে গত ১৪ মার্চ বিকেলে ভুক্তভোগীর বাসায় গিয়ে বিয়ের আশ্বাস দেন। কিন্তু পরদিন ফোনে কল দিয়ে বিয়ে করবেন না বলে জানান। এতে ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা বললে গালিগালাজ করেন ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এছাড়া ওই নারীর কিছু আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে ভাইরাল করার হুমকি দেন সাঈদ। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী নারী।