জাতীয়সারাদেশ

শেষ পর্যন্ত অনুমোদন পায়নি গণস্বাস্থ্যের কিট

Share this:

করোনাভাইরাস পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যের কিট ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডকে চিঠি দিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হয় সরকারি এই দপ্তর থেকে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘অনুমোদনের জন্য নির্ধারিত মানের না হওয়ায় গণস্বাস্থ্যের কিট অনুমোদন পায়নি। এর সেনসিটিভিটির নির্ধারিত মান শতকরা ৯০। কিন্তু তাদের কিটের সেনসিটিভিটি ৬৯ দশমিক ৭। নির্ধারিত মানের নিচে থাকায় তা গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণে কারিগরি কমিটি তাদের অনুমোদন না দেওয়ার সুপারিশ করেছে।’

অনুমোদন না দেওয়াকে ‘দুঃখজনক’ বলেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। রাতে তাদের প্যাডে ‘জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড ডট ব্লট প্রকল্পের সমন্বয়কারী ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

গণস্বাস্থ্যকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘২৪ জুন ২০২০ তারিখে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবেদনটি ডিসিসি (ড্রাগস কন্ট্রোল কমিটি) মেডিকেল ডিভাইস সংক্রান্ত ট্কেনিক্যাল কমিটির সভায় মূল্যায়নের জন্য উপস্থাপন করা হয়। কমিটির সদস্যগণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির সার্স-কোভ-২ অ্যান্টিবডি (আইজিজি+আইজিএম) এর জন্য ন্যূনতম সেনসিটিভিটি ৯০ শতাংশ এবং স্পেসিফিসিটি ৯৫ শতাংশ নির্ধারণ করে গণস্বাস্থ্যের টেস্ট কিটের মূল্যায়ন করেছে। সেনসিটিভিটি ন্যূনতম লেভেল না হওয়ায় এর রেজিস্ট্রেশন না দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছে।

‘আপনাদের টেস্ট কিটের মূল্যায়ন রিপোর্টে সেনসিটিভিটি ৬৯ দশমিক ৭ শতাংশ এবং স্পেসিফিসিটি ৯৬ শতাংশ। যা সেনসিটিভিটির ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য মাত্রা ৯০ এর নিচে পাওয়া যায়।’ ‘এমতাবস্থায় কমিটির সুপারিশ এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সার্স কোভ-২ অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট রেজিস্ট্রেশন নীতিমালা অনুযায়ী আপনাদের আবেদন জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড অ্যান্টিবডি ডট ব্লট টেস্ট কিটের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

প্রসঙ্গত বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সঙ্কটের শুরুর দিকে যখন কিট সঙ্কট প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছিল, তখনই দেশীয় প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষে কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তে কিট উদ্ভাবনের খবর দেন তাদের বৈজ্ঞানিক বিজন কুমার শীল। এরপর চীন থেকে কাঁচামাল (রি-এজেন্ট) এনে কিটের স্যাম্পল তৈরির কাজ শুরু করেন তারা। গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের এই ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট কিট দিয়ে ৫ মিনিটে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে, খরচ হবে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।

এরপর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে দীর্ঘ বিতর্কের পর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গত ৩০ এপ্রিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে তাদের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য বিএসএমএমইউ অথবা আইসিডিডিআরবিতে নমুনা জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়। এরপর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২ মে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য ৬ সদস্যের কমিটি করে এবং ১৩ মে তাদের উদ্ভাবিত কিট বিএসএমএমইউতে জমা দেয়। ৩৪ দিন পর বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *