জাতীয়সারাদেশ

সক্ষমতাকে কাজে লাগান : আইজিপি

Share this:

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, জনগণের পুলিশ হতে হলে জনগণকে ভালবাসতে হবে। দমন পীড়ন থেকে বেরিয়ে এসে আইনি সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে। পাশাপাশি মাদকসহ ধরনের দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বৃহস্পতিবার পুলিশকে জনবান্ধব, আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে পুলিশ সদরদপ্তরে সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের মতামত গ্রহণ বিষয়ক ৫ দিনের কর্মশালার শেষ দিনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। পুলিশের ইনোভেশন এন্ড বেস্ট প্র্যাকটিস শাখা এ কর্মশালার আয়োজন করে।

আইজিপি বলেন, বর্তমান করোনাকালে পুলিশ যেভাবে জনগণের কাছে গিয়েছে, তাদের পাশে থেকেছে, তাদেরকে সুরক্ষা দিয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। পুলিশ কাজটি নিজেদের মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে করেছে বলেই মাত্র তিন মাসে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে। যদিও এ কাজের জন্য অনেক পুলিশ সদস্য নিজের অজান্তেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, জীবন দিয়েছেন ৪৪ জন সম্মুখযোদ্ধা বীর পুলিশ সদস্য। এরপরেও আমরা বলতে চাই, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর করোনার কারণে যে সুযোগ আমরা পেয়েছি সেটি হাত ছাড়া করবো না। করোনা চলে গেলেও আমরা আর আগের স্থানে ফিরে আসবো না। বরং সেখান থেকে আরো এগিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের অন্যতম সারথী হিসেবে দেশের জন্য রক্ত দিয়ে গড়া এ বাহিনীকে উন্নত দেশের উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।

বর্তমানে পুলিশ সদস্যদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সুরক্ষা সামগ্রী রয়েছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে মাত্র দুই সপ্তাহে ২৫০ থেকে ৫০০ বেডের কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় ঢাকায় আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা সম্পন্ন একটি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালেও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের ন্যায় একই প্রটোকলে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। এর ফলে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাদের মৃত্যুর হার কমছে।

তিনি বলেন, করোনায় পুলিশ শুধু কোয়ারেন্টাইন, লকডাউনই বাস্তবায়ন করেনি। অসহায় মানুষের বাসায় খাবার পৌঁছে দিয়েছে, অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে যখন স্বজনরা কেউ এগিয়ে আসেনি, তখন পুলিশ তাদের জানাজার আয়োজন, দাফন এবং সৎকারের ব্যবস্থা করেছে। এসব দায়িত্ব পুলিশের নয়, পুলিশকে এ দায়িত্ব দেয়াও হয়নি। কিন্তু পুলিশ কেন এটা করেছে? পুলিশ কাজটি নিজেদের মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে করেছে। এজন্য মাত্র তিন মাসে পুলিশ মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৫০ বছর আগে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশ সেবায় পুলিশের জন্য একটা সুযোগ তৈরি করেছিল। ৫০ বছর পর করোনা আবার জনগণের কাছে যাওয়ার একটা সুযোগ নিয়ে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুলিশ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে সাধারণ থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল দিয়ে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকহানাদার বাহিনীকে মোকাবিলা করেছে। প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের অন্যতম সারথি হিসেবে দেশের জন্য রক্ত দিয়ে গড়া এ বাহিনীকে উন্নত দেশের উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *