বরিশাল বিভাগ

আগৈলঝাড়ায় তথ্য গোপন করে অন্য জেলার বাসিন্দাকে মনোনীত ॥ ক্ষোভ

Share this:


প্রতিনিধি, আগৈলঝারা (বরিশাল) :

জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায় জয়িতা বাছাইয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। তথ্য গোপন করা অন্য জেলার বাসিন্দাকে নির্বাচিত করে তালিকায় ঠাঁই দেয়ায় সংশ্লিষ্ট বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন উপজেলাবাসী।


জানা গেছে, নারী অগ্রজের পথিকৃত বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বরাবরের মতো পাঁচটি ক্যাটাগরীতে জয়িতার অন্বেষণ করা হয়। সে অনুযায়ী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী নারীদের আবেদন গ্রহন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হওয়া নারী পদে দুইজন, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী পদে দুইজন, সফল জননী পদে দুইজন, নির্যাতনের বিভিষীকা মুছে ঘুরে দাঁড়ানো পদে একজন ও সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখা পদে একজনসহ পাঁচটি ক্যাটাগরীতে মোট আটজন নারী আবেদন করেছেন।


এসকল আবেদনের কোনটিই নির্ধারিত তারিখের মধ্যে জমা পরেনি বলে জানিয়েছেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দৌলতুন্নেছা নাজমা। পরে তিনি জেলা অফিসের সাথে কথা বলে আবেদন গ্রহনের সর্বশেষ তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ১৫ নভেম্বর।


সূত্রে আরও জানা গেছে, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন পদে মোট সাতটি আবেদন জমা হলেও “অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হয়েছেন যে নারী” পদে উপজেলা সদরেরর ভাড়াটিয়া সঞ্চিতা বৈষ্ণবের আবেদন গ্রহণ করা হয় ১৮ নভেম্বর সকালে। রহস্যজনক কারণে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কৌশলে নির্ধারিত সময়ের পরে সঞ্চিতা বৈষ্ণবের আবেদনপত্র জমা নিয়েছেন। একইদিন একটি সভায় বিষয়টি তিনি (মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা) বাছাই কমিটির সভাপতির কাছে উপস্থাপন করেন। এসময় তাকে (দৌলতুন্নেছা) ভর্ৎসনা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হাশেম। মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সদস্য সচিব মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা।
সূত্রমতে, কমিটির একাধিক সদস্যর অনুপস্থিতিতে নিজের ইচ্ছানুযায়ি বাছাই কাজ শেষ করেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দৌলতুন্নেছা নাজমা। বাছাইতে “অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হয়েছেন যে নারী” পদে স্থানীয় নারী সাংবাদিক রুবিনা আজাদকে মনোনীত করেন বাছাই কমিটি। স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের কাছে তথ্যের সত্যতা স্বীকার করেন বাছাই কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হাশেম।


পরবর্তীতে দেখা যায়, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তার পছন্দ সই ব্যক্তি সঞ্চিতা বৈষ্ণবকে ওই পদে মনোনীত করেছেন। খোঁজনিয়ে জানা গেছে, সঞ্চিতা বৈষ্ণবের স্বামীর বাড়ি খুলনা জেলায়। তার স্বামী ঢাকায় কর্মরত। সঞ্চিতা উপজেলা শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করে বাজারের একটি ভাড়া দোকানে বুটিকের ব্যবসা করেন।
অন্যদিকে রুবিনা আজাদ জীবন সংগ্রামে লড়াই করে প্রকৃত স্বাবলম্বী হলেও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার খামখেয়ালীপনায় তাকে (রুবিনা) অতিগোপনে বাদ দিয়ে অন্যজেলার বাসিন্দা সঞ্চিতা বৈষ্ণবকে মনোনীত করা হয়েছে।


আবেদনকারী রুবিনা আজাদসহ স্থানীয় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তালিকা তৈরিসহ অভিযুক্ত মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলতে রাজি হননি অভিযুক্ত উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দৌলতুন্নেছা নাজমা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *