আন্তর্জাতিকগল্পবিবিধ

বহু আক্রমণের শিকার হয়েছি অশরীরী আমার আশেপাশেই থাকে -কাইফ খান

Share this:

যে ঘটনাটি একবার ঘটে সেটি চোখের ভূল, আর প্রতিনিয়ত যদি ঘটতে থাকে তাহলে অদ্ভুত। ইসলাম ধর্মে জীন জাতির কথা উল্লেখ রয়েছে, এবং সেখানে ভালো মন্দ মিশিয়েই অস্তিত্ব বিদ্যমান। তবে স্পিরিট, ডেভিল, ডেমনস, হতে পারে ভিন্ন নামে ভিন্ন দেশে।

পৃথিবীর আদিকাল থেকে ভূতের গল্প চলমান। তবে বাস্তবে ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। তবে মানুষ ভয় পেতে ভালোবাসে- এ কথা মনোবিজ্ঞানীরাও মনে করেন। ভয়ে দু’হাত দিয়ে চোখ ঢেকে ফেললেও আঙুলের ফাঁক দিয়ে সাংঘাতিক দৃশ্যটা দেখতেও যেন ভুল করে না। তবে সেই সাংঘাতিক দৃশ্যগুলো বিশ্বে তুলে ধরছে এক তরুণ। আজকের গল্পটা তাকেই নিয়ে লেখা। তাকে নিয়ে লিখেছেন -অরণ্য সোয়েব।

জার্মানীতে বসবাস করা বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত কাইফ খান। ছোটবেলা থেকেই সেখানে বাবা মার সাথে থাকা আর পড়াশোনার গন্ডি পেরিয়েছেন অনেক আগেই। হোটেলের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর দায়িত্বে থাকলে বাকি সময়টা একদম ভিন্ন কিছু নিয়ে।

শয়তান, ভূত,ডিমনস, আত্ন্যা কিংবা অজানা কোনো অস্তিত্বের খবরে তিনি থাকেন। জার্মানীর জনপ্রিয় প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেট টিম ‘উরবেক্স এলিট’ এর একজন টিম মেম্বার কাইফ খান। গত তিন চার বছরে পুরো জার্মানীর বিভিন্ন পরিত্যক্ত বাড়িঘর তিনি ভিজিট করেছেন। ফেসবুকে পেয়েছেন লাখ লাখ ভিউ রাতারাতি পেয়েছেন তারকা খ্যাতি তাঁর এই অভিনব ভাবমূর্তি এবং অশরীরী নেশা ও পরিত্যক্ত বাড়িঘরগুলো বিশ্বমন্ডলে প্রদর্শন তাঁকে জনপ্রিয় করে তুলেছে বিনোদনের দুনিয়াতে।

কাইফ খান প্রথম একজন বাংলাদেশী ভ্লগার যে ইউরোপের শীর্ষ পরিত্যক্ত ভৌতিক স্থানগুলো নিয়ে শুট করেন। এতে করে সম্মুখীন হতে হয়েছে আক্রমণের সে ভিডিও ও ছবি একবার তিনি তার ৬ লাখ ৪৪ হাজার লাইক পেজ এ শেয়ার করেন।

রাতারাতি নজরে আসেন কাইফ খান ২০১৮ তে জার্মানীর ভিসাপাডেম পরিত্যক্ত হাসপাতালে ভিজিট করার মধ্যে দিয়ে।শুরু হয়ে তার ভূত যাত্রা। খোলন শহরে ২০২০ সালে পরিত্যক্ত কিছু বাড়িও তিনি পরিদর্শন করেন। উরবিক্স এলিট ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি টিম মেম্বার হন।

এখন অব্দি বহুবার তিনি খারাপ কিছুর সম্মুখীন হয়েছেন ৮ বার কাইফ খান ফিজিক্যালি অ্যার্টাক হোন। বার্লিন শহরে একটি পরিত্যক্ত বৃদ্ধাশ্রম পরিদর্শন করতে গিয়ে, বের হওয়ার সময়ে রাস্তা খুঁজে পাননি। যে ভিডিওটি তার পেজে দেওয়া হয়েছে।

স্কুডকার্ড এ কালো জাদুর একটা জংগলে আক্রমণ এর স্বীকার হয়েছিল এবং ১৪ অক্টোবর আখেন শহরে ৩ জন ছিল কাইফরা সেখানে রাত ১১ থেকে ১ টা অব্দি ছিলেন। তবে সেখানে একজন বিদগুটে গন্ধ ও কিছু অস্তিত্বের ফিল করেন তারা এবং তাদের একজন অজ্ঞান হয়ে পরে।

এইসবের ঘটনার সত্যতা জানতে কথা হয় প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেট টিম ‘উরবেক্স এলিট ‘ মেম্বার কাইফ খানের সাথে তিনি ডেইলি বাংলাদেশ টাইম কে বলেন, দেখুন আমি জার্মানীর বিভিন্ন পরিত্যক্ত বাড়িঘর জংগলে গিয়েছি ভিডিও করেছি এবং অনেক সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমি সবসময় বলি ‘বিশ্বাস করা আপনার ব্যাপার ‘ যার সাথে ঘটে সেওই অভিজ্ঞতায় পূর্ণ হন যে ঘটনা কি আসলে। আপনি বিশ্বাস করুন আর নাই করুন ‘আমরা যেটা দেখতে পাইনা সেটাই অদ্ভুত ‘। আমার দীর্ঘদিন ধরে এই প্যারানরমাল ও হরর যায়গাগুলো ঘুরেছি দেখেছি ও নিজেও এর অস্তিত্ব পেয়েছি। যা দেখেছি তা ফেসবুক ও ইউটিউবে শেয়ার করেছি। ২০১৬ সালের রেডিও ফুর্তির ভুত এফ এমও আমি এইসব ঘটনা শেয়ার করেছি। এখানে আসলে মিথ্যের আশ্রয় নেওয়ার মত কিছু নেই।

আপনি এখন পর্যন্ত কতগুলো হরর স্পট ভিজিট করেছেন?এবং কি কি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন? কাইফ খান বলন, আমি সেই ২০১৮ থেকেই একা একা ভিজিট করেছি এরপরে উরবেক্স এলিটে জয়েন্ট করার পর আরো বহু যায়গায় ঘুরেছি। আমি যেখানেই গিয়েছি সেখানেই কিছু না কিছু অস্তিত্ব আমি অনুভব করেছি। জুলাইর দিকে আমি লাক্সামবর্গে গিয়েছিলাম সেখানের একটি স্থানে অসংখ্য বাচ্চাকে খুন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে সেই স্থানটি পরিবেশগতভাবেই পরিত্যক্ত হয়,ঘটনার সাল ১৯৯৬। আমি কিছুদিন আগে সেখানে গিয়েছিলাম আর দেখি দেয়ালে রক্ত দিয়ে কিছু লেখা ছিল, আমি সেই ঘরে ঢুকতেই কেমন জানি অস্বস্তি লাগছিল আর আমি একাই ছিলাম, কিছুক্ষণ বাদেই আমি ঘন কিছু ফিল করি এবং আমাকে পিছন থেকেই ধাক্কা দেয় কিছুতে আমি সাথে সাথেই পড়ে যাই, আমার পা মচকে যায়। এছাড়াও ব্ল্যাক ফরেস্ট আরেক নাম সুইডসাইট ফরেস্টে গিয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে এখানে দেখেছি ইলুমিনাতির ডেবিল চর্চার কিছু জিনিসপত্র। এই ভিডিওটা আমার পেজে আছে প্রায় ১১ কোটির উপরে আছে ভিউ আছে। আমার ফেসবুক ফলোর্য়াস আছে প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি পেযে আছে ৭ লাখের কাছাকাছি এবং ইউটিউব কাইফ খানে আছে ৩০ হাজারের বেশী সাবস্ক্রাইব ও ভিডিও আছে ৩২ টির উপরে।

সব পেশা থাকতে কেন এই পেশা বেছে নিলেন? এবং এই পেশাতে অনেক রিস্ক জেনেও কেন? জানতে চাইলে কাইফ খান আরও বলেন,দেখুন আমি সেই ছোটবেলা থেকেও এই ভূতপ্যাত, অশরিরী, আত্না, গল্প শুনেই বড় হয়েছি এবং মাঝেমধ্যে নিজেও অনুভূতি করেছি? আমি যতবার বাহিরে থেকে টিম এর সাথে কাজ করে ঘরে ফিরেছি আমার সাথে টুকটাক ‘স্পিট লাইনআপ ও ফিল শেয়ারিং ‘ ঘটেছে। আমি যখন ইনভেস্টিগেট করে ঘরে ফিরতাম আমি ফিল করতাম কিছু একটা নড়েচড়ে উঠল বা কেউ আমাকে ফলো করছে। আমাদের পাশের দেশ ইন্ডিয়াতে কিন্তু এর প্রচলন বহু। সেখানেও অনেক গোস্ট হান্ট টিম রয়েছে এবং তারা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন গণমাধ্যমে। এটা তো জানেন যে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই দিল্লির দ্বারকায় নিজের বাড়িতে রহস্যজনক ভাবে মারা যান গৌরব তুহেরি। তিনিও নিজেও কিন্তু আমেরিকার প্যারানেক্সাস অ্যাসোসিয়েশন থেকে স্বীকৃত পাওয়া ব্যাক্তি ছিলেন। আমার ভাগ্যে তো এটা লেখা থাকতে পারে যে কোনো অদৃশ্য শক্তির অশশীরী আমার মৃত্য রহস্যজনক। আসলে আমরা জানি আমাদের জীবন রিস্কি কিন্তু তারপরেও যদি আমরা উপকারে আসি সাধারণ মানুষের ও কৌতুহল মিটাতে পারি তাতে দোষ কিসের? আমি জার্মানীর ভৌতিক ধ্বংসাবশেষ পরিচিত অনেক স্থানেই অশরীরীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি এটাও আমি বলব কারণ আমি বানিয়ে কিছুই বলতে চাইনা যেটা সত্যি সেটাই বলব।

আপনার কাজে উৎসাহও পান কোথায় থাকে? এই কাজে বাধাগ্রস্ত হতে হয় কেমন? জানতে চাইলে তিনি যোগ করেন, আমি বাসা থেকে মোটেও এই কাজে উৎসাহ প্রদান করেন না বরং আমাকে এই কাজ থেকে বের হতে বলেন। আমি সাধারণত অস্ট্রেলিয়ার প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর অ্যালেন টাইলারের কাজগুলো পছন্দ করি। বাংলাদেশে থেকে একটি টিমের কাজ ভালো লাগে আর বাকিসব মোটামুটি ভাওতাবাজি বলব। আর আমার কাজের সবচেয়ে বড়বাধা আমি নিজেই কারণ, আমি মিশে গেছি এখন সবকিছুর সাথে।

আপনি যখন বিভিন্ন বাড়ি ও সমাধিক্ষেত্র-সহ ‘ভৌতিক’ বলে পরিচিত এ রকম বেশি বাড়িতে অভিযান চালান তখন সবচেয়ে অস্বস্তির বিষয়গুলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখুন সব কাজেই কিছুনা সমস্যা থাকেই আর আমি যে স্পিরিচুয়াল কাজ করি এতে তো জ্বালার চেয়েও যন্ত্রণা বেশী। একটু সেদিক এদিক হলেও সমস্যা। আমি সূরা কালাম যা জানি তা দিয়েই চলি এবং আমার ঘরে সুরা আয়াত দিয়ে বন্ধক করা আছে। কিন্তু পরিত্যক্ত বাড়িঘর জংগলে একদম নিরিবিলি দেখা যায় ১০ থেকে ৪০ কিলোর মধ্যে কিছু নাই আর ছমছমে রহস্যময়তা চমকে উঠায়ই তো স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে বিশ্রী অনুভূতির ছোয়া তখনি দেহে লাগে যখন ছোট আওয়াজে রুপ নেয় গন্ধে কিংবা অবয়ক কিছুর সম্মুখীন হওয়া। তারপরেও আমি আমার কাজকেই পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আছে ফ্লোরিডার ইনস্টিটিউট অব মেটাফিজিক্যাল সায়েন্স স্পিরিচুয়াল কাউন্সেলর এবং হিপনটিস্টের সাথে কাজ করা।

ভূত, ভৌতিক, অসশীরী, স্পিরিচুয়াল নিয়ে নিয়ে আপনার ভবিষ্যতে পরিকল্পনা শুনতে চাই বললে কাইফ খান বলেন,আমি যেখানে আছি আমি সেখানেই থাকব। আমি আসলে প্রাকৃতিক বিষয় নিয়েই কাজ করতে চাই। আমি জানি আমার বিপদ আসন্ন কিন্তু তারপরও ভূত, ভৌতিক, অসশীরী, স্পিরিচুয়াল নিয়ে মানুষের সাথে যে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে আক্রমণ এর স্বীকার হয়েছে ও কৌহতুল সেটা আমি মোচন করতে থাকব।

সবশেষ তিনটি প্রশ্ন করব ভেবে চিনতে উত্তর দিবেন?

আপনি ভূত বিশ্বাস করেন?

উত্তর – সারাদিন আমার সাথে যা ঘটে সেটি বিশ্বাস করতে আমারই কস্ট হয়, মন মানলে মাথা মানতে চায়না। দেখুন এইটা অনেকটাই এই কথার মত যে আপনার সাথে যা ঘটবে এবং আপনার যা অভিজ্ঞতা হবে এটাই হচ্ছে অদ্ভুত। আসলে আমার সাথে যা ঘটে সেটাই অদ্ভুত এবং এটার বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যা নেই। তবে থার্ড ডাইমেনশনে ঘটে যাওয়া অনেক কিছুর ব্যাখা নেই। আপনি জানেন অক্সিজেন ছাড়া বাঁচা মুশকিল কিন্তু আপনি সেই অক্সিজেন বাতাস ধরতে পারেন? পারেন না তো? অবিসংবাদিত ! সৌরজগতে বাহিরে প্রাণের অস্তিত্ব আছে এ খবর আমরা নিয়মিত শুনে কিন্তু কেন? বিজ্ঞানের ফলে তাই না! কিন্তু যতদিন আবিষ্কার হয়নি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার এর আগে কি তাহলে এর অস্তিত্ব ছিল না? দেখুন কিছু অবশ্যই আছে।

ভূত দেখা যায় ভূত দেখা যায়না বেশ তর্ক আছে কি বলবেন? এক গাল হাসি দিয়ে তিনি বলেন, ভূত প্রেতাত্মা, খারাপ আত্না, অভিশপ্ত কিছু এইসব না দেখাই ভালো, তবে সাধারণ মানুষ যোগাযোগ মাধ্যেমে যেসব ভিডিও দেখেন তার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এডিট ও ভূয়া। তবে এই ক্ষেত্রে একটা কথা স্পিরিট, ভূত প্রেতাত্মা, খারাপ আত্না, অভিশপ্ত অস্তিত্ব আঁচ করা যায় অজিয়া বোর্ড কিংবা প্লানচেট করলে নিজেরাই বুঝতে পারবেন (প্লিজ না জেনে কেউ কিছু করবেন না), আমি টিমে কাজ করার সুবাদে অনেক কিছুই চোখের সামনে ঘটে। আর হেভি ইক্যুপমেন্ট যেমন ডেমনস ক্যাপচার করার আলাদা মিটার, লাইট, ক্যামেরা দিয়ে আমরা কাজ করি। সেখানে হালকা আবছায়া অবয়ব দেখা যায়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে ফিজিক্যালি হিউম্যান বডিসহ দেখতে পাওয়া যেতে পারে।

ভূত প্রেতাত্মা, খারাপ আত্না, অভিশপ্ত থেকে দূরে থাকতে কি পন্থা অবলম্বন করতে হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন,আল্লাহ কে ডাকব তিনি আমাদের সকল ধরনের বিপদ থেকে মুক্তি করবেন ইনশাআল্লাহ। আমরা যারা ইসলাম ধর্ম পালন করি তারা অবশ্যই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করব ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করব। এবং যারা রাতে দিনে বাহিরে চলা ফেরা করেন তারা ঘর থেকে বের হওয়ার আগে সুরা আয়াত কালাম পড়ব।

বিঃদ্র- ফিচারটি স্বত্ব ডেইলি বাংলাদেশ টাইম এর। অন্যস্থানে লেখাটি পাওয়া গেলে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাইফ খান এর পেজ লিংক , যেখানে সব ভিডিও রয়েছে।

https://www.facebook.com/MykaiFkHaN

One thought on “বহু আক্রমণের শিকার হয়েছি অশরীরী আমার আশেপাশেই থাকে -কাইফ খান

  • Kaniz Fatema Mukta

    Mykaif er shob gulo video ami dekhchi and bishshash korsi

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *