জাতীয়সারাদেশ

স্বর্ণ আমদানির প্রথম চালান

Share this:

আমদানীর অনুমতি নিয়ে গত ৩০ জুন মঙ্গলবার বৈধভাবে দেশে আসলো স্বর্ণের প্রথম চালান। আমদানির অনুমতি পেয়ে গত ১০ জুন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড তাদের গোল্ড ডিলারশিপের অনুকূলে ১১ কেজি পাকা সোনা আমদানি করে। এই সোনা আনার পর ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি দিলীপ কুমার আগরওয়ালা এখন সোনার গহনা রপ্তানির প্রত্যাশা করছেন।

জানা যায়, ২০১৮ সালের আগে বাংলাদেশে বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানির সুযোগ ছিল না। ওই বছর সরকার দেশের জুয়েলারি শিল্পের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ স্বর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করে। তাতে সোনা আমদানির সুযোগ দেয়া হলেও ভ্যাট বেশি হওয়ার কারণে কেউ আমদানি করতে আগ্রহ দেখায়নি বলে জানান বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। তবে এবারের বাজেটে ভ্যাট কমানোয় অনেকেই আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান তিনি। আগরওয়ালা বলেন, বাজেটে অর্থমন্ত্রী সোনা আমদানির উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পরপরই ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের পক্ষ থেকে দুবাই থেকে ১১ কেজি সোনা আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল। সেই সোনা মঙ্গলবার রাতে দেশে এসেছে। এটাই ৪৯ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশে বৈধপথে প্রথম সোনা আমদানি। এরমধ্য দিয়ে দেশের জুয়েলারি শিল্পের ইতিহাসে একটি সোনালী অধ্যায়ের সূচনা হলে। এতদিন যে গোল্ড আসত, তা অবৈধ পথে আসত। আর কিছু আসতো ব্যাগেজ রুলসের আওতায়।

এখন দেশে ‘গোল্ডনির্ভর’ শিল্প গড়ে ওঠার প্রত্যাশা জানিয়ে আগরওয়ালা বলেন, কাঁচামাল আসা শুরু হল, এখন এ খাত বিকশিত হবে। একটার পর একটা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। সুতা আমদানি করে পোশাক তৈরি করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে যেমন বিদেশি মুদ্রা দেশে আসছে, ঠিক তেমনি গোল্ড দিয়ে তৈরি নানান ধরনের গহনা রপ্তানি করেও বিদেশি মুদ্রা আসবে। ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার জুয়েলারি খাত থেকে ৫০০ কোটি টাকার বেশি কর পাবে বলে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই গহনা ব্যবসায়ীর অনুমান। তিনি বলেন, আমাদের সুবিধা হচ্ছে, সস্তা শ্রম। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশে গোল্ডনির্ভর বড় বড় শিল্প গড়ে উঠবে। বিনিয়োগ বাড়বে, কর্মসংস্থান হবে। এভাবে আমরা জিডিপিতে ভূমিকা রাখতে চাই। তবে ব্যাগেজ রুলসের আওতায় ২০০ গ্রাম সোনা আমদানির যে সুযোগ আছে, সেটা এখন বন্ধ করতে হবে। যেহেতু বৈধ পথে সোনার আমদানি হচ্ছে, এখন আর ওইটার প্রয়োজন নেই।

স্বর্ণ নীতিমালায় দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও রপ্তানি বাণিজ্য সম্পসারণের জন্য সোনা আমদানির জন্য ‘গোল্ড ডিলার’ নিয়োগের বিধান রাখা হয়। গোল্ড ডিলার নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯ সালের মার্চ মাসে সার্কুলার দেয়। ওই সার্কুলারে ৫০টি প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি ব্যাংক আবেদন করলেও সব শর্ত পূরণ না হওয়ায় মাত্র ১টি ব্যাংক ও ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে নবায়নযোগ্য দুই বছর মেয়াদি লাইসেন্স দেয়। গত ১০ জুন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড তাদের গোল্ড ডিলারশিপের অনুকূলে ১১ কেজি (১১০০০ গ্রাম) পাকা সোনা আমদানির জন্য আবেদন করে। আবেদনটি যাচাই বাচাই করে বাংলাদেশ ব্যাংক অনাপত্তি দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *