বরিশাল বিভাগ

বীর প্রতীক আব্দুল মালেক আর নেই

Share this:


প্রতিনিধি, গৌরনদী (বরিশাল) মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের খেতাবপ্রাপ্ত বীর প্রতীক ও বিডিআরের অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার আব্দুল মালেক (৮০) বিভিন্নরোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় গৌরনদী উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের নিজবাড়িতে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহির…রাজিউন)। তিনি স্ত্রী, চার ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে মরহুমের লাশ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে ।


তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে বীর প্রতীক আব্দুল মালেক হৃদরোগ, ডায়াবেটিকসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। প্রায় ১০ বছর আগে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে তিনি পঙ্গুত্ব বরন করেন । একইসাথে বাক ও শ্রবনশক্তি হারিয়ে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। আব্দুল মালেক মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ৯ নং সেক্টরের গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্বের ভূমিকা রাখায় তাকে বীর প্রতীকের খেতাব দেওয়া হয়েছিলো ।


সূত্রে আরও জানা গেছে, গৌরনদীর কুতুবপুর গ্রামের মৃত খাদেম আলী চাপরাশির ছেলে আব্দুল মালেক ১৯৬১ সালে তৎকালীন ইপিআর বাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি চাকরী ছেড়ে নিজ এলাকায় চলে আসেন। এলাকার যুবকদের নিয়ে তিনি মুক্তিবাহিনীর একটি ইউনিট গঠণ করেন ।

অতঃপর প্রশিক্ষনের জন্য তাদের ভারতে নিয়ে যান। ভারতের বেগুনদিয়া টার্কী ক্যাম্পে ওইসব যুবকদের প্রশিক্ষণ শেষে আব্দুল মালেককে ৫৬ জন মুক্তিবাহিনীর একটি দলের গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি তাদের নিয়ে নিজ এলাকায় ফিরে মুক্তিযুদ্ধের ৯ সেক্টরের অধীনস্থ আঞ্চলিক কমান্ডার নিজাম উদ্দিন ও হেমায়েত বাহিনীর সাথে যুক্ত হন ।

এরপর তিনি বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, মুলাদী, উজিরপুরসহ বিভিন্নস্থানে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহন করে বীরত্বের ভূমিকা পালন করেন। আব্দুল মালেক ছিলেন ৯নং সেক্টরের কমান্ডার মেজর (অব.) আব্দুল জলিলের বিশ্বস্ত সহচর। স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় যুদ্ধপরবর্তী সময়ে আব্দুল মালেককে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি পূনরায় বিডিআর বাহিনীতে যোগদান করেন। হাবিলদার হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর ১৯৮৪ সালে তিনি অবসরগ্রহন করেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *