আমার রাজনীতির আদর্শ জহির উদ্দিন স্বপন :খান মোহাম্মদ আরিফ
ছোটবেলা থেকেই বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপি’র প্রতি অকৃতিম ভালোবাসা তার। নাম কে,এম আরিফুল ইসলাম আরিফ তবে রাজনৈতিক নাম খান মোহাম্মদ আরিফ নামেই বেশ পরিচিত।বলছিলাম বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার পৌর ছাত্রদল এর আহবায়ক কমিটির ২ নং সদস্যর কথা। সারাজীবনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও দলের প্রতি এক অজানা টান খান মোহাম্মদ আরিফ এর। তবে আজ জানাবেন তার জীবন রাজনীতি ও বেড়ে উঠা নিয়ে গল্পকথা নিয়ে। আর তাকে নিয়ে গল্প সাজিয়েছেন -সিনিয়র রিপোর্টার সোয়েব সিকদার,(অরণ্য)….

**আপনার রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাই!
আরিফ খান – বিএনপি ‘র রাজনীতি ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপি ‘র চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করতে দেখেছি বাবা-চাচাদের। রাজনীতি হাতেখড়ি মূলত আমার সেখান থেকেই। মূল রাজনীতিতে প্রবেশ আমার ২০১২ সাল থেকে। মূলত আমাদের গৌরনদী- আগৈলঝাড়ার সংসদ সদস্য এবং বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদার উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন ভাইকে দেখেই আমার রাজনীতিতে প্রবেশ। কারণ তার ব্যক্তিত্ব ও রাজনীতির আদর্শ আমাকে প্রভাবিত করে সবসময়। আমার রাজনৈতিক আদর্শ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং তারুণ্যের অহংকার জননেতা তারেক রহমান। তবে রাজনৈতিক গুরু এবং আইডল জহির উদ্দিন স্বপন ভাই। আমি যতদিন বাঁচি তার ছাঁয়ায় থাকতে চাই। একজন জহির উদ্দিন স্বপন শুধু গৌরনদী- আগৈলঝাড়ার সংসদ সদস্য নয় তিনি সাড়া বাংলাদেশের সম্পদ। জহির উদ্দিন স্বপন ভাইয়ের সহকর্মী হওয়ার যোগ্যতা সবাই রাখেনা। আমি সামান্য একজন বিএনপির কর্মী।নিজেকে এর চেয়ে খুব বেশী কিছু ভাবতে চাইনা।

**বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে কখনো বাধাগ্রস্ত হয়েছেন কিনা?
আরিফ খান -মুচকি হাসি দিয়ে… সেই ২০১২ থেকে ২০২৫ কতবার যে শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছি তা লিখে রাখিনি হয়তো তবে বিভিন্ন মিডিয়াতে তা প্রকাশ পেয়েছে। সবচেয়ে গুরুতর আহত হয়েছি ৮/১০ বার। ২০১৮ সালের পৌরসভা নির্বাচনের সময়। বিএনপি থেকে মনোনীত প্রার্থী জহির সাজ্জাদ হান্নান শরীফ ভাইয়ের ওয়ার্ক করার সময় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের কর্মীদের কাছ থেকে নির্মম প্রহার করা হয় আমাকে। দীর্ঘদিন হাসপাতালে আমার চিকিৎসা নিতে হয়।

এরপরে ২০২৩ সালে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত দাম বাড়ার কারণে জনতার সাথে বরিশাল টাউনহলে আমরা রাস্তায় নামি ও আন্দোলন করি।কিন্তু হটাৎ করেই আমাদের উপর চড়াও হয় ফ্যাসিস্ট সরকারের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। চরমভাবে আমাদের উপর বোমা নিক্ষেপ ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করে। এবং সে বছরই তারুণ্যের ডাকসভা নিয়ে সারা বাংলাদেশ একটি প্রোগ্র্যাম করে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল – বিএনপি। আমরা যাওয়ার পথে আমাদের উপর হামলা করে ১ নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি সুজন হাওলাদার ও তার দলবল। পরবর্তীতে আমাকে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সেসময় বিভিন্ন মিডিয়াতে এটি নিয়ে লেখালেখি হয় এবং বরিশাল জেলা ছাত্রদল, গৌরনদী থানা ছাত্রদল, ওয়ার্ড ছাত্রদল বিভিন্ন বার্তায় নিন্দা প্রকাশ করেন। শুধু আমাকে মেরেই ক্ষ্যান্ত হয়নি বরং ফ্যাসিস্ট সরকারের পাতিনেতারা আমার পরিবারের সদস্যদের লাঞ্চিত, বসতবাড়িতে আগুন, উচ্ছেদ এবং আমার ছোটভাই ৩ নং ওয়ার্ড পৌর ছাত্রদলেরসাধারণ সম্পাদক খান মোহাম্মদ রাসেলকে নির্মমভাবে মারধর করে। এক জীবনে এত মার খেয়েছি যা বলার বাহিরে। তবুও দলকে ভালোবাসি আর ভালোবেসে যাবো, আমার যা হবার হবে। পল্টি রাজনীতি আমার দ্বারা সম্ভব না।

**আপনার দলের প্রতি কোনো আক্ষেপ কিংবা তিক্ততার অভিজ্ঞতা আছে কিনা?
আরিফ খান – ক্ষানিকটা চুপ থেকে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে… না কোনো তিক্ততা নেই। হয় শিখেছি না হয় জেনেছি।আমি সর্বদা দলের সাথেই ছিলাম, অনেক সময়ে সিনিয়রদের কাছ থেকে হয়তো কিছু বিষয় থেকে বৈষম্যের একটা ছোঁয়া পেয়েছি সেটি নিয়ে আক্ষেপ নেই আমার। তবে আক্ষেপ আছে আমার দলে কিছু অনুপ্রবেশকারী উইপোকার জন্য। যদিও তারুণ্যের অহংকার জননেতা তারেক রহমানের একটাই কথা দলে অনুপ্রবেশকারীদের কোনো ছাড় নেই। দলের মূলকর্মীদের মূল্যায়ন সবসময়ই নেতার কাছে থাকে। তাই বিষয়টি নিয়ে আমি চিন্তিত নয়।

**দলের প্রতি আপনার মূল্যায়ন ব্যাখ্যা কিভাবে করবেন?
আরিফ খান – দেখুন বিএনপি বাংলাদেশের একটি সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। আমি জিয়ার সৈনিক। তার আদর্শ বুকে ধারণ করি লালন করি। এছাড়াও আমরা বিএনপি পরিবার, যা এলাকায় অতি পরিচিত। তারা অনেকেই পদপদবী খ্যাত। তারপরে আমি নিজে দলের সংবিধান অনুযায়ী কাজ করি। রাজপথে নিজেকে বিক্রি করে দেইনি। দলের জন্য সবসময় ছিলাম, সব বাধা অতিক্রম করে দায়িত্ব নিয়ে দলকে গতিশক্তি বাড়িয়েছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিলাম, আপোষহীন মনোভাব নিয়ে কাজ করেছি। তারুণ্যের অহংকার জননেতা তারেক রহমানের এক কথা রাজপথে নেমে এসেছি। আমার অভিভাবক ও আইডল জহির উদ্দিন স্বপন ভাইয়ের ডাকে সাড়া দিয়েছি। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। নিজের জীবনের একটি বিশাল সময় দলের জন্য উৎসর্গ করেছি। যে বয়সে সবাই ঘুড়ি উড়ায় সে বয়সে দলের পোস্টার আর ফেস্টুন নিয়ে উড়েছি এবং কলেজ ব্যাগে বই থাকার পাশাপাশি মামলার কাগজ নিয়ে আদালতে হাজিরা দিয়েছি সেই সময়গুলোতে।

**আপনি বলেছেন আপনার আইডল ও রাজনৈতিক অভিভাবক জহির উদ্দিন স্বপনের কথা! আপনার মুখে তার মূল্যায়ন কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
আরিফ খান – মুচকি হাসি দিয়ে… আমি এটি বরাবরই বলি যে জহির উদ্দিন স্বপন এক আসনের নেতা নন তিনি আমাদের সবার নেতা। তার সহকর্মী হওয়ার যোগ্যতা সবাই রাখেনা। আমি তার একজন সামান্য কর্মী হতে পেরে ধন্য। আমি বড়গলায় বলি যে জহির উদ্দিন স্বপন আমার অভিভাবক।আসলে স্বপন ভাইয়ের রাজনীতির আদর্শ, ব্যক্তিত্বের প্রেমে পরেই আমার রাজনীতিতে প্রবেশ। যারা জামাকাপড় এর মতন অভিভাবক বদলায় তারা কোনোদিন ব্যক্তিত্বের প্রেমে কিংবা রাজনীতির প্রেমে পরেনি। তবে সে প্রেমে আমি পরেছি বহুকাল আগে। আমি তার সাথে সবসময় থাকব, তার আদর্শ ও রীতিনীতি সংস্কৃতি মেনে চলব এবং জিয়ার সৈনিক হিসেবেই থাকব।রাজনৈতিক নেতা আসবে যাবে কিন্তু লিজেন্ড থেকে যাবে। রাজনীতির আকাশে জহির উদ্দিন স্বপন একটি তাঁরার নাম।

**মনে করেন দল থেকে বরিশাল-১ আসনের নমিনেশন যদি জহির উদ্দিন স্বপন না পান তাহলে কি করবেন?
আরিফ খান – দেখুন এটি নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারুণ্যের অহংকার জননেতা তারেক রহমান ও দল যেটি ভালো মনে করবে সেটাই হয়তো করবে। তবে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ও আমার দেখামতে, এবং দুই থানার জনগণ চায় জহির উদ্দিন স্বপনকে।
আমার একার চাওয়ার যদি বিষয় থাকত তাহলে অন্য কথা ছিল, কিন্তু যাকে পুরো বরিশাল জুড়েই চায় তাকে আপনি কিভাবে না দেখার ভান করে থাকবেন? (উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন প্রতিবেদককে)… জহির উদ্দিন স্বপন একটি ব্র্যান্ডের নাম মানে একটি নক্ষত্র, যাকে কিনা তিন যুগেরও বেশী সময় ধরে জ্বলজ্বল করে জ্বলছিল পুরো রাজনীতির আকাশ জুড়ে। তাকে কিভাবে আপনি নিভাবেন বলুন ? (আবারো উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন প্রতিবেদককে)…তবে হ্যা আমার কথা সোজাসুজি, যে সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে আরো বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতারা রয়েছেন। দল যাকে পছন্দ করবে এবং যার জনপ্রিয়তা আছে তাকেই হয়তো নমিনেশন দিবে। দলের বাহিরে কেউ নয় দলের উর্দ্বে কেউ নয়।

**রাজনীতি নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শুনতে চাই!
আরিফ খান – আমি ছোটবেলা থেকে সেই একই রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত, বিএনপির সাথে।না অভিভাবক বদলেছে না দল বদলেছে আমার। আমি সেই এক আদর্শে এর ঘোরেই আছি থাকব। জিয়ার সৈনিক ও তার আদর্শ লালন করি, বুকে ধারণ করি। তারুণ্যের অহংকার জননেতা তারেক রহমান এর দেখানো পথে হাটি এবং আমার রাজনৈতিক গুরু আমার আইকন জহির উদ্দিন স্বপন ভাইয়ের দিকনির্দেশনা ফলো করি। ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার ভাবনা শুধুই রাজনীতি আর এর বাহিরে কিছুই নয়। তবে চেস্টা করব রাজনৈতিক অভিভাবক এর দিকনির্দেশনা পালন করার এবং জননেতা তারেক রহমান এর স্বপ্ন সারথি হবার। আমার মতন সাধারণ একজন মানুষের আর কিইবা আর বেশী চাইবার থাকবে? সবার দোয়া নিয়ে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

ডেইলি বাংলাদেশ টাইম স্পেশাল, শেষ তিন প্রশ্ন…
**আলাদীনের যাদুর চেরাগ পেলে কি করতেন?
আরিফ খান – হাসি দিয়ে, বলতে চাইনা।
**টাইম মেশিনে পূর্বে যেতে পারলে কি করতেন?
আরিফ খান – অবশ্যই শিশুকালে যেতাম। যে দিনগুলো হারিয়েছি, সে দিনগুলো ফিরে পেতে চাইতাম বস।

**আপনি ভালো মানুষ নাকি খারাপ মানুষ?
আরিফ খান – আমার এলাকায় খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন। তাই পরবর্তী ইন্টারভিউতে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিবে হাহাহাহা…