সেই বিশ্বরঙ এই বিশ্বরঙ, পথচলার ২৭
ফ্যাশন জগতের আকাশে বিপ্লব সাহা একটি তারার নাম। বিপ্লব সাহা মানেই বিশ্বরঙ, আর বিশ্বরঙ মানে বিপ্লব সাহা। শুধু বিশ্বরঙ একটি ব্র্যান্ডের নাম নয়, বরং একটি বিপ্লব সাহা’ই ব্র্যান্ড। যার হাতে সূচনা আজকের এই বিশ্বরঙ
এদেশের অন্যতম ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘বিশ্বরঙ’। ১৯৯৪ সাল থেকে ভিন্নধর্মী কাজের জন্যই ফ্যাশন সচেতনদের অকৃত্রিম ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আসছে। বিগত সময়ে বাংলাদেশের ফ্যাশন জগতে ফ্যাশন সচেতনদের জন্য অন্তঃপ্রাণ প্রচেষ্টার ফসল প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষামূলক কাজগুলো।
এদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য- শখের হাঁড়ি, মুখোশ, নকশী পাখা, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলার পটচিত্র, বাংলা পঞ্জিকা, ঐতিহ্যে বাংলা সিনেমা, পানামনগর, কান্তজী মন্দিরের টেরাকোটা, রিকশা মোটিফসহ আল্পনার মতো মহামূল্যবান মোটিফকে পোশাকের অলংকরণ হিসেবে ব্যবহার করে দেশীয় ফ্যাশনকে ইতিহাস-ঐতিহ্যের মিশেলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বিশ্বরঙ।
তারা পোশাকের নানা রকম প্রদর্শন করেছে আমেরিকা, ভারত, মালয়েশিয়া, কানাডার মত ফ্যাশন সচেতনদের দেশে। এ ছাড়াও বিভিন্ন দিবসে পোশাকের বর্ণিলতা বিশ্বরঙের মাধ্যমেই শুরু হয় এ দেশে। যা আজ অভিন্ন এক রীতিতে সামগ্রিকভাবে প্রচলিত।
প্রতিষ্ঠানটি দেখতে দেখতে ২৬ বছর শেষ করে ২৭ বছরে পা রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার বিপ্লব সাহার ভাষায়, ‘সব সীমাবদ্ধতাকে উপেক্ষা করে সৃষ্টির ব্যাকুলতায় ১৯৯৪ সালের ২০ ডিসেম্বর সময় রাঙানোর ব্রত নিয়ে নারায়ণগঞ্জে সূচনা হয়েছিল ফ্যাশন হাউজ ‘রঙ’র। সময়ের ব্যাপ্তিতে সময় রাঙানোর ব্রতটা রূপ নেয় এ দেশের ফ্যাশন সচেতন মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায়। বিংশ শতাব্দী অতিক্রম করে একবিংশ শতাব্দীর এ সময়ে এসে সময় রাঙানোর ভাবনাটা ছড়াতে চাই বিশ্বময়। রঙ যেন মোর মর্মে লাগে রবি ঠাকুরের এই অনুভবকে বিশ্বময় ছড়াতেই ২০১৫ সালে নতুন নামে পথচলা শুরু করে ‘বিশ্বরঙ’।’

এই উপলক্ষে বিশ্বরঙের ক্রেতা, মিডিয়াকর্মী, তারকা, অভিনেতা, অভিনেত্রী, মডেলসহ নানা শ্রেণিরপেশার শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিপ্লব সাহা।
তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারিতে বাংলাদেশসহ পৃথিবী যখন স্থবির, মানুষ গৃহবন্দী, প্রকৃতির কাছে মানুষের সমস্ত জ্ঞান, বিজ্ঞান তখন অসহায়। সব শিল্প কারখানা বন্ধ, জীবন জীবিকার টানাপোড়েনে মানুষ দিশেহারা। কাছের দূরের কতশত মানুষের মৃত্যু সংবাদ প্রতিদিনের নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছিল। তবুও জীবন থেমে নেই, চলেছে গতিহীন গতিতে। তখনো বাংলাদেশের অন্যতম ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘বিশ্বরঙ’ এ দেশের তাঁতীদের পাশে দাঁড়িয়েছে নিভৃতে। তাঁতশিল্প রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বিভিন্নভাবে। শুধু তাঁতীদের রক্ষায় অনলাইন সেবা চালু রেখে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাদের পণ্য, যাতে তাদের দু’মুঠো আহার জোটে। এটুকু করার সুযোগ পেয়ে আমরা আনন্দ পেয়েছি। নিজেদের দায় কিছুটা হলেও যেন মেটাতে পেরেছি বলে তৃপ্তি পেয়েছি।’
বিপ্লব সাহা বলেন, ‘আমাদের নকশাগুলো আমাদের লোক-সংস্কৃতির ঐতিহ্য দ্বারা অনুপ্রাণিত। যা ঐতিহাসিকভাবে দক্ষতার উৎস হিসেবে একটি নির্ধারিত ভূমিকা পালন করে আসছে সুদীর্ঘ ২৭ বছর ধরে। নতুন সব ভাবনার আয়োজনে পরিবারের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিটির জন্য ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানাতে নিয়ে এসেছে ‘বিশ্বরঙ’র সহযোগী ব্র্যান্ড ‘শ্রদ্ধা’। তেমনই দেশীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক চলের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে টিনেজদের জন্য বাহারি নকশা ও বৈচিত্রময়তায় উপস্থাপন করেছে ‘ফেইসরঙ’ এবং ‘বিশ্বরঙ মেনজ’। শিশুদের জন্য রয়েছে ‘বিশ্বরঙ কিডস’।